ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম ২০২৩ | NID Card Transfer (বিস্তারিত দেখুন)

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগবে, ভোটার এলাকা পরিবর্ত ন ফরম ১৩ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। যাদের ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার প্রয়োজন (NID Transfer) তারা অবশ্যই উল্লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী আবেদন দাখিল করতে পারবেন।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার নিয়ম ২০২৩ | NID Card Transfer (বিস্তারিত দেখুন)
ভোটার এলাকা পরিবর্তন

আজকের আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে। ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার জন্য করণীয় ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ কি কি?



দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় তার কারণে মানুষ সর্বদা নিজের স্থায়ী ঠিকানায় বসবাস করতে পারে না। এমন অনেকেই আছে যারা লেখাপড়া, চাকরি, ব্যবসা বা অন্য যেকোন প্রয়োজনের জন্য নিজ স্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে দূর-দূরান্তে গিয়ে বসবাস করে থাকেন। এর ফলে তারা নিজের স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার না হয়ে বর্তমান ঠিকানায় ভোটার হচ্ছেন। 

 

অনেকে আছেন যাদের ভোটার এলাকা স্থানান্তর করা প্রয়োজন, কিন্তু ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার জন্য কী করণীয় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ কি কি সে বিষয়ে সঠিক ধারনা নেই।

 

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। যাদের ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার প্রয়োজন, তারা অবশ্যই উল্লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী আবেদন দাখিল করতে পারবেন। 

 

                    

NID Card Transfer- ভোটার স্থানান্তরের আবেদন



আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যারা বিভিন্ন কারণে স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হতে না পেরে বর্তমান ঠিকানায় ভোটার হয়ে থাকেন। যার ফলে কখনো না কখনো ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে হয়। 

 

ভোটার এলাকা পরিবর্তন বিষয়ে অনেকে নানা ধরনের প্রশ্ন থাকে। যেমন- ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে, ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে, ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফি কত টাকা, অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা সম্ভব?  এছাড়া আরও নানান প্রশ্ন থাকে। 



সঠিক নিয়ম জানা না থাকলে, ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে  হয়। কারণ সঠিক তথ্য জানা না থাকলে নানান সমস্যায় পড়তে হয়, এতে অনেক মূল্যবান সময় ব্যয় হয়। 



তাই  মূল্যবান সময় নষ্ট না করে এই সকল প্রশ্ন সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে, আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।



ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে? 

 

যদি আপনি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চান, তাহলে ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম 13 পূরণ করে আবেদন করতে হবে। 

 

কিন্তু ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম 13 কোথায় আবেদন করবেন?

 

আপনি যে উপজেলায় স্থানান্তরিত হবেন সেই উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার এলাকা স্থানান্তর বা এনআইডি টান্সফার (NID Transfer )  করার জন্য আবেদন করতে হবে। এনআইডি (NID Transfer ) টান্সফার করার জন্য ভোটার এলাকা স্থানান্তর ফরম 13 পূরণ করে আবেদন করতে হবে। 



ভোটার এলাকা পরিবর্তন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম: 



আবেদন ফরম 13 হাতে পাওয়ার পর প্রথমে ভালোভাবে পড়ে দেখতে হবে। ভোটার এলাকা স্থানান্তর আবেদনের ফরম পূরণের জন্য নিম্নে বর্ণিত তথ্য গুলো উল্লেখ করা হলোঃ-

 

  • ফরমের ১ নং ক্রমিক  আবেদনকারীর নাম লিখতে হবে (বাংলায়)।

 

  • ফরমের ২ নং ক্রমিক  আবেদনকারীর এনআইডি কার্ড(NID CARD)/ভোটার আইডি কার্ডের নম্বর লিখতে হবে ।

 

  • ফরমের ৩ নং ক্রমিকের আবেদনকারীর জন্ম তারিখ (DATE OF BIRTH) দিতে হবে।

 

  • ফরমের ৪ নং ক্রমিকে আপনার পূর্বের ভোটার এলাকা ঠিকানা উল্লেখ করে দিতে হবে।ভোটার এলাকার নাম, ভোটার এলাকার উপজেলা/থানার নাম,  ভোটার এলাকার নম্বর, ভোটার এলাকার জেলার নাম, ভোটার এলাকার গ্রামের নাম ও নম্ব, বাসার হোল্ডিং নম্বর সহ সব গুলো পূরণ করতে হবে। তবে ভোটার নম্বর বা ভোটার এলাকার নম্বর যদি না জানা থাকে  তাহলে অফিস থেকে জেনে নিয়ে তা  লিখতে হবে।

 

  • ফরমের ৫ নং ক্রমিকে আপনি যে ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তর করাতে চাইছেন ওই এলাকার ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। ওই এলাকার সকল তথ্য যেমনঃ-জেলার না, উপজেলার নাম, ইউনিয়ন, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা এর মধ্যে যেটির আন্ডারে আপনি স্থানান্তর হবেন সিটিতে টিক চিহ্ন দিতে হব। তারপর আপনার ওয়ার্ড নম্বর, ভোটার এলাকার নাম, ভোটার এলাকার নম্বর, রাস্তার নাম গ্রাম ও নম্বর, ডাকঘর এবং পোস্ট কোড লিখে দিতে হবে। 

 

  • ফরমের ৬ নং ক্রমিকে, ৫ নং ক্রমিকের বর্ণিত ঠিকানায় আপনি কতদিন যাবৎ বসবাস করছেন তা উল্লেখ করতে হবে। যেমন  ৫ নং ক্রমিকের ঠিকানা আপনার জন্মস্থান হতে পারে এক বছর বা তিন বছর যাবত বসবাস করছেন। 

 

  • ফরমের ৭ নং ক্রমিকে আপনি কেন ভোটার এলাকা স্থানান্তর করবেন সেটা উল্লেখ করতে হবে। সেটা হতে পারে বৈবাহিক সূত্রে স্বামীর ঠিকানায় বসবাস করছেন বিধায় ভোটের স্থানান্তর করতে চান, অথবা এটি আপনার স্থায়ী ঠিকানা তাই আপনি স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তর করতে চান ইত্যাদি। 

 

  • ফরমের এর পিছনের পাতায় আবেদনকারীর স্বাক্ষর এর স্থানে  শুধুমাত্র আবেদনকারীর স্বাক্ষর করতে পারবে। এবং আবেদনকারীর এনআইডি কার্ডের ছবির নিচে যেমন করে স্বাক্ষর করা আছে ঠিক তেমন ভাবেই স্বাক্ষর করতে হবে। স্বাক্ষর আলাদা আলাদা হলে আবেদন বাতিল হতে পারে। 

 

  • ফরমের ৮ নং ক্রমিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিষয় উল্লেখ  আছে। যাবতীয় কাগজপত্র আপনি যে ঠিকানায় ভোটার স্থানান্তর করতে চাইছেন সেই ঠিকানার হতে হবে। 



মনে করুন,  আপনি মিরপুর উপজেলার ভোটার হয়েছেন। এখন ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে নিয়ে আসতে চান টঙ্গী উপজেলায়। 



তবে আপনি টঙ্গী সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য আবেদন করবেন। আবেদনের জন্য নিম্নোক্ত কাগজপত্র জমা দিতে হবে।



ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে 



  • পৌরসভায় হলে পৌরমেয়র বা ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। আর যদি ইউনিয়নের আওতায় হয় তাহলে চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। 

 

  • বাড়ির গ্যাস বিল অথবা বিদ্যুৎ বিলের কপি। (বাড়ির যেকোনো একজন সদস্যের নামের বিল হলেই হবে)। 

 

  • পৌরকরের রশিদ/চৌকিদারি টেক্স রশিদ/বাড়ি ভাড়ার রশিদ এর মধ্যে যার যেটি আছে সেটি জমা দিতে হবে। (বাড়ির যেকোনো একজন সদস্যের নামের রশিদ হলেই হবে)।

 

  • আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ড/জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি। 

 

  • উল্লেখিত সকল কাগজপত্র উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। অফিস থেকে আপনাকে আবেদনের নিচের অংশ কেটে দিলে সেটি যত্ন করে রাখতে হবে। পরবর্তীতে অফিসে গেলে আপনাকে দেয়া স্লিপটি অবশ্যই সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। আপনার আবেদনের কার্যক্রম শুরু হলে আপনার মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। 

 

  • আপনার মোবাইলে মেসেজ যাওয়ার পর আপনার আবেদন অনুমোদন হয়েছে নাকি বাতিল হয়েছে সে বিষয় উল্লেখ থাকবে। মেসেজে আপনার আবেদন অনুমোদনের কথা বলা থাকলে বুঝবেন আপনার ভোটার এলাকা স্থানান্তর হয়েছে।



  • আর যদি এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে কোন মেসেজ না আসে তাহলে আপনাকে দেয়া স্লিপটি নিয়ে অবশ্যই উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। 



  • ভোটার এলাকা স্থানান্তরের আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে আপনি ওই এলাকার পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভোট দিতে পারবেন। ভোটার এলাকা স্থানান্তর করলে অফিস থেকে আপনাকে নতুন করে কোনো এনআইডি কার্ড (NID Card) দেয়া হবে না। 

 

  • নতুন করে এনআইডি কার্ড পাওয়ার জন্য ভোটার এলাকা স্থানান্তর হওয়ার পর অনলাইনে বা অফিসে রিইস্যুর আবেদন বা এনআইডি কার্ড উত্তোলনের আবেদন করে এনআইডি কার্ড (NID Card) সংগ্রহ করে নিতে পারবেন।



  • এখানে ভোটার আইডি কার্ডের তথ্যে একজন ব্যক্তির দুইটি ঠিকানা উল্লেখ থাকবে। একটি হচ্ছে বর্তমান ঠিকানা এবং অপরটি স্থায়ী ঠিকানা। কেউ যখন ভোটার এলাকা স্থানান্তর করেন তখন অধিকাংশ সময় তার বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হয়। এবং স্থায়ী ঠিকানার স্থানে পূর্বে ঠিকানাই উল্লেখ থাকে। এক্ষেত্রে সংশোধনের আবেদন করে এনআইডি  কার্ডের স্থায়ী ঠিকানা সংশোধন করে নিতে হবে। 




ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগবে? 

 

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কখনো কখনো 10 দিন থেকে 15 দিন সময় লাগতে পারে। আবার কখনও কখনও এক মাসের বেশি সময় লাগে।

 

আপনি যদি দ্রুত ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে আগ্রহী থাকেন তাহলে অফিসে আপনার সকল তথ্য জমা দেয়ার পরে তাদেরকে আপনার ব্যস্ততার সম্পর্কে বুঝিয়ে বলতে হবে। যাতে করে তারা দ্রুত কার্যক্রম শুরু করে দেয়। 




ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফি কত টাকা? 

 

আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য ভোটার এলাকা পরিবর্তন ফরম ১৩ আবেদন করার জন্য ফি কত টাকা জমা দিতে হবে সে বিষয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে। 

 

অনেকেই আছে যারা আবেদনকারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের জন্য বড় অঙ্কের ফি চেয়ে থাকে। 

 

কিন্তু ভোটার এলাকা পরিবর্তন এর জন্য কোনো প্রকার সরকারি ফি জমা দেয়া প্রয়োজন হয় না। অর্থাৎ সম্পূর্ন ফ্রিতে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে। 

 

তাই যদি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে ফি দাবি করে থাকে তাহলে বুঝবেন সেটা সরকারি ফি নয়। 




অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন:

 

অনেকেই রয়েছে জানতে চান অনলাইনে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করা যায় কি না। 

 

না। আপনারা চাইলে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করেত পারবেন না। আপনাকে ফরম ১৩ পূরন করে সরাসরি উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে। 




অবশেষে বলা যায়, আপনি যদি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চান তাহলে অবশ্যই নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে খুব সহজে ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে নিতে পারবেন। 

 

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ভালো লাগলে লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন।